Saturday, 26 September 2020

ছাত্রলীগের হাতে বিগত ১১ বছরে খুন ৩৬ মেধাবী ছাত্র|Sunamganj Live|সুনামগঞ্জ লাইভ

ছাত্রলীগের হাতে বিগত ১১ বছরে খুন ৩৬ মেধাবী ছাত্র|Sunamganj Live|সুনামগঞ্জ লাইভ


স্বাধীনতার পর দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হত্যার রাজনীতি চালু করে আওয়ামী ছাত্রলীগ। স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটায় ছাত্রলীগ। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা শফিউল আলম প্রধান সূর্যসেন হল থেকে ধরে এনে মুহসীন হলে ৭ জন ছাত্রকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। সেই থেকে শুরু যার শেষ বলি হলো বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফরহাদ। ১৯৭৪ থেকে ২০১৯ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে অসংখ্য শিক্ষার্থী। বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যাকান্ড তারই ধারাবাহিকতা। নাগরিক সমাজের সময়ের দাবি ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করা।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুন হয়েছেন ৩৩ জন মেধাবী ছাত্র। ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের আধিপত্য বিস্তার, সিট দখল, হল দখল নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি মূলত এসব হত্যাকান্ডের প্রধান কারণ।
ফেসবুকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির প্রতিবাদে নিজের মত জানানোর কারণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় এখন তোলাপাড় আন্তর্জাতিক মহলসহ সারাদেশ। বর্বরোচিত এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন লাখো কোটি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী। যে স্ট্যাটাসের জেরে তাকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েটের একই হলের বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। প্রতিটি হত্যাকান্ডের ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রথা মেনে তদন্ত কমিটি করেছিল। থানাতেও মামলা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ডামাডোলে হারিয়ে গেছে এসব মামলা। তাই বিচারের অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের আহাজারি কখনোই শেষ হয় না।
গণমাধ্যমে বেরিয়ে আসা সেসব হত্যাকান্ডের ঘটনাগুলো জড়ো করে দেখা যায়, গত ১০ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), বুয়েট, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে লাশ হয়েছেন ৩৩ জন শিক্ষার্থী। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও জেলা কমিটিগুলোতে ছয় বছরে ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে বা অন্য সংগঠনের সঙ্গে অন্তত পাঁচ শতাধিক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। এতে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিহত হয়েছেন ৩৩ জন। এদের মধ্যে নিজ সংগঠনের ১৬ আর বাকিরা প্রতিপক্ষ সংগঠনের নেতাকর্মী কিংবা সাধারণ শিক্ষার্থী, রয়েছে ১০ বছরের শিশু রাব্বীও। দেখা গেছে, এসব হত্যাকান্ডের অধিকাংশের বিচার হয়নি। সরকার ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিচার কার্যক্রম মুখথুবড়ে পড়েছে বলে মনে করেন নিহতদের আত্মীয়-স্বজনরা। বিচার না হওয়ায় অব্যাহতভাবে চলছে একের পর এক হত্যাকান্ড। ২০১২ সালে জবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে নিহত বিশ্বজিৎ দাসের বড় ভাই উত্তম দাস গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাগুলোর সঠিক বিচার হলে অনেকাংশে সংঘর্ষ কমে আসত। আমরা এই রায় কার্যকর দেখতে চাই।
ঢামেক থেকে শুরু : ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিজেদের সংঘর্ষে প্রথম হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে ওই বছরের ৩০ মার্চ। নিহত হন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আসাদ ওরফে রাজীব। এ হত্যার মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্য রূপ লাভ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলই এ হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী। ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নির্মমভাবে খুন হন মেধাবী ছাত্র আবু বকর। এ হত্যা মামলায় সব আসামি ছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারির রাতে চট্টগ্রামের ষোল শহর রেলস্টেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মহিউদ্দিন কায়সারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার জন্য ছাত্রলীগ ও শিবির একে অপরকে দায়ী করে। পরে মহিউদ্দিনকে নিজেদের কর্মী দাবি করে চবি ছাত্রলীগ ও শিবির উভয় দলই। ২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবিরের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শাহ আমানত হল ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মামুন হোসেন নিহত হন। ২০১০ সালের ২৮ মার্চ রাতে শাটল ট্রেনে করে চট্টগ্রাম শহর হতে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে চবি মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র হারুন অর রশীদকে গলাকেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ২০১০ সালের ১৫ এপ্রিল চবি ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে অ্যাকাউন্টিং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী আসাদুজ্জামান নিহত হন। ২০১২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে দফায় দফায় গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় মুজাহিদ ও মাসুদ বিন হাবিব নামের দুই শিবির কর্মী নিহত হয়েছেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ছাত্রলীগ কর্মী তাপস সরকার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চবির ২নং গেট সংলগ্ন নিজ বাসায় খুন হন ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ। এ হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মী।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: ২০০৯ সালের ১৩ মার্চ ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন রাবির শিবিরের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান নোমানী। পরের বছর ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল দখলকে কেন্দ্র করে শিবির-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কর্মী ও গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারুক হোসেন। ২০১০ সালের ১৫ আগস্ট শোক দিবসে টোকেন ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে শাহ মখদুম হলের দোতলার ছাদ থেকে ছাত্রলীগ কর্মী নাসিরুল্লাহ নাসিমকে ফেলে হত্যা করে ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা। ২০১২ সালের ১৫ জুলাই রাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে গোলাগুলির ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল্লাহ আল হাসান ওরফে সোহেল। পদ্মা সেতুর চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের এই আভ্যন্তরীণ কোন্দল লাগে বলে রিপোর্টে প্রকাশ। ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের বলি হন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রস্তুম আলী আকন্দ। ২০১৪ সালের ৪ এপ্রিল নিজ কক্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।
ময়মনসিংহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়: কোনো শিক্ষার্থী নয় বাকৃবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের গোলাগুলীতে বলি হন ১০ বছরের শিশু রাব্বি। ২০১৩ সালের ১৯ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড ঘটে। ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ নিজ দলের নেতাকর্মী হাতেই প্রাণ হারান আশরাফুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী সায়াদ ইবনে মমাজ। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটে বলে সে সময় জাতীয় সব গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: এ হত্যাকান্ডের ছবি ও ভিডিও প্রকাশের পর সারা দেশ প্রকম্পিত হয়। শিবির সন্দেহে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাসকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচির দিনে এ নির্মম হত্যাকান্ড ঘটে। এ ঘটনায় আটজনের মৃত্যুদন্ড ও ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত দুজন ও যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ১১ জনই ‘পলাতক’ রয়েছেন।
ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি ছাত্রলীগের মধ্যে অন্তর্কলহের জেরে এক হামলায় গুরতর আহত হন জাবির ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ হত্যাকান্ডের পর ক্যাম্পাসে তীব্র আন্দোলনের মুখে তৎকালীন জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়: ২০১২ সালের ৯ জুন সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি ফাহিম মাহফুজ বিপুল। ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালইয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা পড়েন হাবিপ্রবির বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র জাকারিয়া ও কৃষি বিভাগের ছাত্র মাহমুদুল হাসান মিল্টন।
২০১২ সালের ১২ মার্চ অভ্যন্তরীণ কোন্দলে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল আজিজ খান সজীব খুন হন।
২০১৪ সালের ১৪ জুলাই ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদ খুন হন।
২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারান ছাত্রলীগ কর্মী ও সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সুমন দাস।
বিভিন্ন কলেজে আরও ১১ খুন : ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ বছরের ৪ জুন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন কলেজ ছাত্রদলের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক ও কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাওহীদ ইসলাম। পরে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। চলতি বছর প্রতিপক্ষের হামলায় খুন হন সিলেটের মদনমোহন কলেজের ছাত্র সোহান। ২৭ জুলাই সিলেটের পাঠানটুলায় গোবিন্দগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর ছাত্রদল নেতা জিল্লুল হক জিলু নিজ দলের কর্মীদের হামলায় নিহত হন। ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর রাতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আসাদুজ্জামান ফারুক নামে কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের শেষ বর্ষের এক ছাত্র মারা যান। সিলেট এমসি কলেজে ২০১২ সালের ১৬ জুলাই ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ছাত্রলীগ নেতা আবদুল্লাহ আল হাসান। ২০১১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও পলিটেকনিকে ফাও খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষে রাইসুল ইসলাম রাসেল নামে এক শিক্ষার্থী মারা যান। ১৯ অক্টোবর ছাত্রদল কর্মীদের হাতে খুন হন মদনমোহন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী আল মামুন শিহাব। ২০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে আবিদুর রহমান নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী হত্যার শিকার হন নিজ সংগঠনেরই কর্মীদের হাতে। ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রমৈত্রীর সহ-সভাপতি রেজানুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ২১ জানুয়ারি পাবনা টেক্সটাইল কলেজের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী মোস্তফা কামাল শান্তকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে যুবলীগ কর্মীরা। একই বছর ১২ জুলাই ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বলি হন সিলেট এমসি কলেজের গণিত বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী উদয়েন্দু সিংহ পলাশ।
সাধারণও বাদ পড়েনি: ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে মারা গেছেন নিরীহ মানুষ ও শিক্ষার্থী। বাদ পড়েনি শিশুও। ২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রামে রেলের দরপত্র জমা দেওয়া নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের মধ্যে গোলাগুলিতে আট বছরের শিশু আরমান হোসেন ও ২৫ বছরের যুবক সাজু পালিত মারা যান। একই বছরের ১৯ জানুয়ারি আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডারবাজি, পূর্বশত্রুতার জের ধরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারিতে নিহত হয় শিশু রাব্বী। গত ১৪ ই জুন ২০২০ রবিবার 
পাবনার চাটমোহরে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে প্রতিপক্ষের অস্ত্রাঘাতে হাবিবুর রহমান হাবিব (২২) নামের এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খুন হয়েছেন

বিশিষ্টজনরা বলেছেন, দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের ধারপ্রান্তে। নেই সুষ্ঠুধারার ছাত্র রাজনীতি, আছে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের একক আধিপত্য। যার ফলে এ সব ঘটনা ঘটছে। এটা দেশের জন্য অশনি সঙ্কেত বয়ে আনবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকমল বড়–য়া গণমাধ্যমকে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের কোন্দল, হল দখলের রাজনীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। এর পরিবর্তন আবশ্যক। নইলে দেশের জন্য অশনি সঙ্কেত বয়ে আনবে। সব ছাত্র সংগঠনের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠুধারার রাজনীতি চালু করলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি আমার এই বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে দেখিনি, একটি হত্যাকান্ডের ঘটনার বিচার হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক নাট্যকার মলয় ভৌমিক বলেন, আমি আমার ৩৫-৩৬ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, একটি হত্যাকান্ডেরও বিচার হয়নি। ঠিকমতো বিচার চাওয়াও হয়নি, বরং লাশের রাজনীতি হয়েছে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ঘটনা ঘটেছে।
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ কর্তৃক তরুণীকে গণধর্ষণ |Sunamganj Live| সুনামগঞ্জ লাইভ

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ কর্তৃক তরুণীকে গণধর্ষণ |Sunamganj Live| সুনামগঞ্জ লাইভ


সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণ করেছে মহানগর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নগরীর টিলাগড়ে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত এসব কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের  সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রনজত সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ধর্ষিত তরুনী তার স্বামীকে নিয়ে সিলেটের এমসি কলেজের ঘুরতে আসেন। ঘুরার এক পর্যায়ে রাত ৮ টার দিকে তরুণীর স্বামী সিগারেট খাওয়ার জন্য এমসি কলেজের গেইটের বাইরে বের হন। এসময় কয়েকজন যুবক তরুণীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চান। এতে তরুণীর স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধোর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে তরুণী ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের হোস্টেলে নিয়ে যান। সেখানে স্বামীকে বেঁধে ছাত্রলীগের তিন-চারজন নেতাকর্মী তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
এসময় তাদের সাথে থাকা ৯০ টি মডেলের একটি কারও ছিনিয়ে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে কারটি তাদের জিম্মায় নেয়। এবং তরুণীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে প্রেরণ করে।
এদিকে ঘটনার পরপর র‌্যাব-৯ সিলেটের এএসপি সামিউল আলম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহা. সোহেল রেজা পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

Wednesday, 23 September 2020

উজানের নৌকা ভাটিতে : আরিফ মাহফুজ |Sunamganj Live|সুনামগঞ্জ লাইভ

উজানের নৌকা ভাটিতে : আরিফ মাহফুজ |Sunamganj Live|সুনামগঞ্জ লাইভ


নিরপেক্ষ দৃষ্টি ভঙ্গিতে রাজনৈতিক সমীকরণ বিশ্ল্লেষণের অধিকার সবারই আছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক চর্চাকে পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক গবেষকরা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর পটভূমি হিসাবে উল্লেখ করেন স্থানীয় রাজনীতিকে।  যার সমীকরণ মিনিটে মিনিটে পরিবর্তন হয়। তবে জাতীয় রাজনীতির ভিত কিন্তু প্রকট ভাবে নির্ভর করে স্থানীয় বা তৃণমূল রাজনীতির উপর। স্থানীয়  বা   তৃণমূল রাজনীতি হলো  জাতীয় রাজনীতির মেরুদন্ড।প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল তৃণমূলের উপর নির্ভরশীল বলেই সব সময় তৃণমূলকে সংগঠিত করার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরত্ব প্রদানের মাধ্যমে সময় ব্যয়  করা হয় ।
আবার দলীয় কট্টর নেতাদেরও খুব গুরুত্ব দেয়া হয় এবং এটাই উচিত। কর্মী থেকে  তিলে  তিলে নেতা হওয়া নেতাদের সঠিক মূল্যায়ন করা  প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নীতি গত বৈশিষ্ট।  কিন্তু হঠাৎ  কিছু ব্যাতিক্রম ঘটনা লক্ষ্য করা যায় যা থেকে রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে মহা সংকটে কিংবা চিন্তায় পরে যান রাজনৈতিক বিশ্ল্লেষকরা বা সুশীল সমাজের চিন্তাবিদরা। এরকম বিষয় যে কোন রাজনৈতিক দলেই ঘটুকনা কেন। সম্প্র্রতি জামালগঞ্জ উপজেলার উপনর্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রাথী নির্বাচনে অত্যন্ত নাটকীয় পটভুমির জন্ম হয়ে গেলো। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে গত ১৮ই সেপ্টেম্বর জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ এর তৃণমূল পর্যায়ে একটি ভোটাভোটি হয়ে গেলো -যেখানে ৬১টি ভোট আর মধ্যে ৫৭টি ভোট পেয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী রেজাউল  করিম শামীম। রেজাউল করিম শামীমের তৃণমূল নির্বাচনের রায় পরিষ্কার করে দিয়েছিলো যে তিনিই দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন বা তিনিই যোগ্য প্রার্থী। কিন্তু বেলা শেষে বদলে গেলো দৃশ্যপট -ট্রেলার যেরকম ছিল ফুল মুভি উল্টো। দল থেকে মনোনয়ন পেলেন তৃণমূল নির্বাচনে ৪ ভোট পাওয়া ইকবাল আল আজাদ। তার মানে রাজনীতির বা রাজনৈতিক দলের  ট্রেলার আর ফুল মুভি এক হয় না। এবার আসা যাক মূল বিশ্ল্লেষণে -ইকবাল আল আজাদের মনোনয়ন পাওয়াকে সবারই স্বাগতম ও অভিনন্দন জানানো উচিত -দলের সবাই ও উপজেলাবাসী সবাই তাঁর জন্য শুভ  কামনা করছে -এটাই স্বাভাবিক। সে তাঁর চেষ্টার মাধ্যমে অর্জন করেছে। এখন কথা হলো মনোনয়ন প্রদান কারীরা প্রাথী নির্বাচনে কি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ? নাকি স্বজন প্রিয়তায় গা ভাসিয়ে প্রাথী দিয়েছেন। নিরপেক্ষতায় থাকলে দৃষ্টি প্রক্ষেপন কি বলে ? মনোনয়ন পাওয়ার কথা ছিলো রেজাউল করিম শামীম -কিন্তু কেন তিনি পাননি ? তাহলে কি পূর্বের বিরাগভাজন কারীরাই  কল কাঠি নেড়েছেন ? যদি তাই হয় তাহলে সারাজীবন একই দলে রাজনীতি করে জীবন পার করে লাভ কি ? বর্ষীয়ান খেতাব লাগানোর দরকার কি ? রেজাউল করিম শামীম একজন কট্টর পন্থী আওয়ামীলীগার।   দল  ত্যাগ দল পরিবর্তন  করতে তাঁকে দেখা যায়নি কখনো। তিনি একনিষ্ঠ একজন আওয়ামীলীগার।গত উপজেলা নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েও তিনি মনোনয়ন পাননি , পরে স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করেন।  যদিও গবেষকদের মতে  গত উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তাঁর নির্বাচন করা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিলোনা। গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়াটাই আজকের প্রেক্ষাপটের জন্য দায়ী। 
তাছাড়াও স্থানীয় অনেক বিষয়ে জড়িত হওয়া নিয়ে রেজাউল করিম শামীমকে নিয়ে নেগেটিভ গুঞ্জন রয়েছে  যা বর্তমান প্রেক্ষাপট সৃষ্টির পিছনে কাজ করেছে। তবে ছোট থেকে বড়  বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতাদেরই নেগেটিভ গুঞ্জন থাকে।  তাই বলে একজন বর্ষীয়ান নেতাকে মূল্যায়নের বাহিরে ফেলে দেয়া কোনো রাজনৈতিক দলেরই উচিত না বা কাম্য নয় ।  এরকমই যদি হয় তাহলে মানুষ প্রকৃত রাজ নীতি থেকে সরে যাবে।  নতুন প্রজন্ম ধরে নিবে নেতৃত্বে আসার জন্য রাজনীতির দরকার নেই -টাকা আর লবিং থাকলেই জনপ্রতিনিধি হওয়া যায়  -যে দুটি জিনিস থাকলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও সময়সীমার কোনোটারই  দরকার নেই সে দুটি জিনিসই দরকার। নতুন
প্রজন্ম যাতে রাজনীতি বিমুখ না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রেখে প্রত্যেক দল কে তৃণমূলকে মূল্যায়ন করে -তৃণমূলের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।  তৃণমূলের মূল্যায়নকে অবজ্ঞা করে উজানের নৌকা ভাটিতে দিলে  রাজনীতির উপর মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে।সেটা  যে কোনো দলই হউক না কেন। সবশেষে , সব প্রার্থীর জন্য শুভ কামনা করছি , যেন সরকারী প্রভাব মুক্ত একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় সেই প্রত্যাশায় ।

লেখক : আরিফ মাহফুজ , সাংবাদিক-কলামিস্ট।

Monday, 21 September 2020

প্রার্থী বনাম প্রতীক : আরিফ মাহফুজ | Sunamganj Live| সুনামগঞ্জ লাইভ

প্রার্থী বনাম প্রতীক : আরিফ মাহফুজ | Sunamganj Live| সুনামগঞ্জ লাইভ


রাজনীতির শেষ বলতে কোন কথা নেই ।  রাজনীতির মেরুকরণ কখন ঘুরে কোথায়  যায় বুঝা যায় না।এ বছর বৈরি আবহাওয়া ও কোভিড-১৯ করোনা মহামারী সংক্রমণ পরিস্থিতিতেও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিভিন্ন সংসদীয় ও উপজেলা পরিষদের শুন্য আসনে উপ নির্বাচন। দেশে রাজনৈতিক পরিবেশও রয়েছে মারাত্মক বৈরী পরিবেশের মধ্যে। সরকারের দমনপীড়ন এর মধ্যে চলছে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকান্ড। অবরুদ্ধ দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি র রাজনৈতিক কর্মকান্ড। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা সঙ্গে নিয়েই উপনির্বাচন এর শুন্য পদ গুলোতে প্রার্থী দিচ্ছে বিএনপি।  লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করা। রাজনৈতিক হিসাব নিকাশের বাহিরেও দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করারও মূল উদ্দেশ্য  ।   অত্যন্ত সুচারু ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে বিএনপি। যোগ্যতার ম্যাপ এবং মাপকাঠিতে মানদন্ড যাচাই করেই প্রতিটি প্রার্থীকে সিলেকশন করেছে দলের হাই কমান্ড। ঘাড়ে চাপিয়ে বা লবিংয়ের মাধ্যমে কোনো আসনের পার্থীকে প্রতীক দেয়া হয়নি। জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের শুন্য আসনে উপনির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপির মনোনীত প্রাথী হিসেবে জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাচনা বাজার ইউনিয়ন পরিষদের  বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুলহক আফিন্দীকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। দলীয়ভাবে ধানের শীষ প্রতীক এর প্রার্থীকে  জানাই অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। উপজেলার সাধারন নাগরিক হিসেবে এবং ব্যাক্তিগত পছন্দ থেকে জানাই লাল গোলাপ শুভেচ্ছা। ব্যাক্তি পছন্দ ও দলীয় পছন্দ দুটি আলাদা বিষয়। রাজনীতির মারপ্যাঁচে দলীয় পছন্দের মধ্যে ব্যাক্তিগত পছন্দ -অপছন্দ বিষয়টি নিয়ে একটি ঘোলাটে পরিস্থিতি কাজ করে সবখানে সব দলেই।  যার জন্য দলীয় নির্বাচনে এর প্রভাব বিস্তার হয়ে দলের ক্ষতি হয়। কোনো ব্যাক্তির সাথে কোনো  ব্যাক্তির আন্তরিকতার অভাব থাকতেই পারে -আবার আন্তরিকতায় ভরপুর থাকতে পারে কিন্তু নির্বাচন প্রাক্কালে এই দুইটি বিষয়কে দূরে রেখে দলীয় প্রেমটাকে প্রকটভাবে জাগিয়ে তোলা প্রয়োজন।  ভুলে যেতে হবে সব পছন্দ-অপছন্দ , মনোমালিণ্য।
সরেজমিনে এবং উপজেলার তৃণমূল বিভিন্ন গ্রামীণ জনপদে  দেখা গেছে নুরল হক আফিন্দীর জনপ্রিয়তা। তিনবারের  ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি তাঁর দক্ষতা প্রমান করতে সক্ষম হয়েছেন।প্রার্থী আপনার এবং প্রতীকও আপনার। দলীয় প্রেমে জাগ্রত হয়ে আগামী ২০শে অক্টোবর  আসন্ন জামালগনগঞ্জ উপজেলা উপনির্বাচনে নরুল হক আফিন্দী-কে ধানের  শীষ প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে জাতীয়তাবাদী ঝান্ডা হাতে  -শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সেই ওমর বাণীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সমস্বরে বজ্রকণ্ঠে আওয়াজ তুলুন -ব্যাক্তির চেয়ে দল বড় , দলের চেয়ে দেশ বড়। প্রার্থী থেকে প্রতীক ,দুটোই আমার দুটোই আমার অহংকার -কারন আমি জিয়ার সৈনিক।
লেখক : আরিফ মাহফুজ ,সাংবাদিক-কলামিস্ট।
            সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য যুক্তরাজ্য বিএনপি।
           সাবেক যুগ্ন-সম্পাদক,যুক্তরাজ্য জাসাস।
জামালগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

জামালগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান


সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর হামলার প্রতিবাদে স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকালে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন পরবর্তী সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমা-ের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কলমদরের সভাপতিত্বে ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমা-ের সাবেক ডেপুটি কমা-ার শ্রীকান্ত তালুকদার, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. রইছ উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা নিতাই বনিক, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মারজানা ইসলাম শিবনা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘বিগত ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের কালীপুর গ্রামের প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সোনাফর আলীর স্ত্রী ও তার ছেলের স্ত্রীর উপর একই ইউনিয়নের লম্বাবাঁক গ্রামের দিলোয়ার হোসেন গংদের চালানো সন্ত্রাসী ও নির্যাতনমূলক কর্মকা-ে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি প্রার্থনা করছি। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলে আর কোন অপরাধী এমন অপরাধ কর্ম করতে সাহস পাবে না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, ‘আমি এখন সুনামগঞ্জ মিটিংয়ে আছি। অফিসে এসে স্মারকলিপি দেখে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

Saturday, 19 September 2020

শেষ ভালো যার, সব ভালো তার: সাজিদুর রহমান সাজিদ |Sunamganj Live|সুনামগঞ্জ লাইভ

শেষ ভালো যার, সব ভালো তার: সাজিদুর রহমান সাজিদ |Sunamganj Live|সুনামগঞ্জ লাইভ


শেষ ভালো যার, সব ভালো তার
সাজিদুর রহমান সাজিদ
..........
শেষ পর্যন্ত এ চরম মা'জুর অবস্থায়ও দেখা গেল শায়খুল ইসলাম আহমদ শফি রাহ. ঠিক। শায়খুল ইসলাম সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রাহ.র বাংলাদেশি খলিফাদের মধ্যে নানা কারণে তিনি সর্বাধিক পরিচিত ও আলোচিত। একই সঙ্গে ছিলেন সর্বজন মান্য ও সর্বজন শ্রদ্ধেয়। কী সুন্দর সব দেনা-পাওনা মিটিয়ে, সব ঝগড়া ও সমালোচনার পথ বন্ধ করে চলে গেলেন। কতিপয় পল্টিবাজ রাজনীতিকের বলয়ে ছিলেন। এরা তারে ঘিরে রাখতো সবসময়। এরা ছাড়া অন্য কাউকে যিনি নির্মোহ বাস্তবতা তুলে ধরতে পারেন- তার ধারও ঘেঁষতে দেওয়া হতো না। তাই অনেকেই তার সমালোচনা করেছে। সেই অনেকের মধ্যে বড় একটা অংশ ছিল মসলকে দেওবন্দবিরোধী। তারা দেওবন্দি সেজে বড় নোংরা সমালোচনায় ছিল লিপ্ত। সমালোচকদের ছোট একটা অংশ ছিল দেওবন্দি। তারা অপপ্রচারে ধোঁকা খেয়ে অনেক কিছু না বুঝে সমালোচনা করেছে। তবে সমালোচক দেওবন্দিদের মধ্যে বেশিরভাগ ছিল ইয়াং জেনারেশন।
জান্নাতি মানুষ হয়ে থাকেন সরলসোজা। সবাইকে বিশ্বাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। দুনিয়ার সঙ্গে তেমন সম্পর্ক নেই। রোগযন্ত্রণা এবং খাতেমা বিল খায়র এর চিন্তায়ই ডুবে থাকতেন সারাক্ষণ। বাইরের জগৎ নিয়ে ভাববার সময়ও ছিল না, শক্তিও ছিল না। এমন অবস্থায় ইন্নি নাসিহুন আমীন হয়ে তাকে পরামর্শ দেওয়া হত, তিনি মানতেন। নিজে ভালো, সবাইকে ভালো মনে করতেন। এই ইন্নি নাসিহুন আমীনরা তাকে কষ্ট দিয়েছে, সমালোচনার পাত্র বানিয়েছে। কেউ কেউ তো তিনি শায়খুল ইসলাম মাদানি রাহ. এর খলিফা কিনা- প্রশ্ন তুলেছে। গোনাহ ওলায়েতর মুনাফি নয়; যেমন খেলাফে আওলা নবুওয়তের মুনাফি নয়। কিন্তু যারা এতসব বেআদবি করল, বদনাম করল, জঘন্য সমালোচনা করল এই ওলীর বিরুদ্ধে- তারা ইতিহাসের আস্তাঁকুড়েই ঠাঁই পাবে। মানুষ তাদের কথা ঘৃণার সাথে স্মরণ করবে। কিন্তু আহমদ শফি রাহ. ইতিহাসের পুরোভাগে উপস্থিত থাকবেন স্বর্ণোজ্জ্বল কান্তি নিয়ে। তাকে মানুষ স্মরণ করবে বিনম্র শ্রদ্ধায়, দোয়ায় ও অকৃত্তিম ভালোবাসায়। তার উত্থান যেমন আলোচিত, তার প্রস্থানও তেমনি প্রশংসিত। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।

Wednesday, 16 September 2020

এক লাফে পেঁয়াজের সেঞ্চুরি: আলী রেজা |Sunamganj Live| সুনামগঞ্জ লাইভ

এক লাফে পেঁয়াজের সেঞ্চুরি: আলী রেজা |Sunamganj Live| সুনামগঞ্জ লাইভ


আলী রেজা: গত বছর এই সময় কৃতিম সংকট তৈরি করে ২৫০-৩০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও, আমরা দেখেছি শেষের দিকে ব্যবসায়ীদের পেঁয়াজ গুদামে পঁচেছে। তাই আমাদের এখনি ক্রয় অভ্যাস পরিবর্তন করা উচিৎ। অযথা আতংকগ্রস্থ হয়ে একসাথে বেশি পেঁয়াজ কিনে মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত মানুষকে বিপদে ফেলা কোন ভাবেই উচিৎ নহে। আমরা অল্প অল্প করে কিনি এবং পেঁয়াজের ব্যবহার কমাবার চেষ্টা করি। মানুষকে আতংকগ্রস্থ করে ব্যবসায়ীরা হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এটাই ব্যবসায়ীদের কৌশল। ব্যবসায়ীদের এই  চালাকি ঠেকাতে আমরা ক্রেতারা প্রতিজ্ঞা করি, পেঁয়াজ গুদামেই পঁচানোর ব্যবস্থা করব। 
বাজারে বর্তমান বাজার দর ৯০-১০০ টাকা।
যে বা যারা এই পেঁয়াজের বাজার দর বাড়ানোর জন্য পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকটের সৃষ্টি করছে, তাদের প্রতি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের দৃৃষ্টি আকর্ষণ করছি । আর আমরা ৩০- ৪০ টাকার পেঁয়াজ ১০০ - ১৫০ টাকায় কিনব না। পেঁয়াজের ব্যবহার কমাব, ব্যয় বাড়াব না। ভারত গতকাল পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করেছে। আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম কোনক্রমেই ৩২ টাকা কেজির বেশি না। তারপরও দাম লাফিয়ে বাড়ছে। এটার জন্য আমাদের দেশীয় ব্যবসায়ীদের অসভ্য মানসিকতাই দায়ী। সেহেতু বর্ধিত দামে প্রচুর পেঁয়াজ কিনে গরীব মানুষকে বিপদে না ফেলে, আসুন পেঁয়াজের ব্যবহার কমাই। ১৫ দিন এই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে, পেঁয়াজের ঝাঁজ আমাদের নয়, বরং অশুভ ব্যবসায়ীদের উপর পড়বে।

Monday, 14 September 2020

করোনায় মারা গেলেন অভিনেতা সাদেক বাচ্চু |Sunamganj Live |সুনামগঞ্জ লাইভ

করোনায় মারা গেলেন অভিনেতা সাদেক বাচ্চু |Sunamganj Live |সুনামগঞ্জ লাইভ


ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু মারা গেছেন। রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১২টা ০৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সাদেক বাচ্চুর মৃত্যুর বিষয়টি সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেছেন শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান। মৃত্যুকালে সাদেক বাচ্চুর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শ্বাসকষ্ট শুরু হলে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সাদেক বাচ্চুকে। হাসপাতালে ভর্তির পর করোনা পরীক্ষা করালে শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) তার করোনা পজিটিভ আসে। তার অবস্থার অবনতি হলে সেদিনই তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সাল হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এ গুণী অভিনেতা।

ডাকবিভাগের সাবেক কর্মকর্তা সাদেক হোসেন বাচ্চু ১৯৮৫ সাল চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। ‘রামের সুমতি’র মাধ্যমে যাত্রা শুরুর পর বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
৫০ বছরেরও বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ার তার। শুরুতে মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতেন। মতিঝিল থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। এ দলের সভাপতিও ছিলেন। বেতারে একটা সময়ে অসংখ্য নাটক করেছেন। বেতারের খেলাঘর তার আলোচিত একটি নাটক।
টেলিভিশন নাটকে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৭৪ সালে। নাটকটির নাম ছিল- প্রথম অঙ্গীকার। প্রথম সিনেমায় অভিনয় করেন আশির দশকে। সিনেমাটির নাম- রামের সুমতি। পরিচালনা করেন শহিদুল আমিন।
বহুমাত্রিক এ অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- জোর করে ভালোবাসা হয় না (২০১৩), জজ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার (২০১৩), জীবন নদীর তীরে (২০১৩), তোমার মাঝে আমি (২০১৩), ঢাকা টু বোম্বে (২০১৩), ভালোবাসা জিন্দাবাদ (২০১৩), এক জবান (২০১০), আমার স্বপ্ন আমার সংসার (২০১০), মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯), বধূবরণ (২০০৮), ময়দান (২০০৭), আমার প্রাণের স্বামী (২০০৭), আনন্দ অশ্রু (১৯৯৭), প্রিয়জন (১৯৯৬), সুজন সখি (১৯৯৪)। 
১৯৫৫ সালের ১ জানুয়ারি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন গুণী এ অভিনেতা। অভিনয় ছাড়াও দীর্ঘ দিন তিনি বাংলাদেশ ডাক বিভাগে চাকরি করেছেন। ‘একটি সিনেমার গল্প’ সিনেমায় অভিনয় করে খল অভিনেতা হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।

Sunday, 13 September 2020

জামালগঞ্জ উপজেলায় নয়াহালট-চাঁনপুর ব্রিজটি এখন মরণফাঁদ

জামালগঞ্জ উপজেলায় নয়াহালট-চাঁনপুর ব্রিজটি এখন মরণফাঁদ


জামালগঞ্জ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায় নয়াহালট চাঁনপুর অংশে চামারবাড়ি খালের উপর ব্রিজটি এখন মরণফাঁদ। ব্রিজের চলাচলের সংযোগ অংশের দু’পাশে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্ত। যেকোন দুর্ঘটনায় পড়লে একেবারে খালের নীচ অংশে চলে যেতে হবে। এই ব্রিজের উপর দিয়ে মারাত্বক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লেগুনা, সিএনজি, অটোবাইক, মোটরসাইকেল ও ধান আনার ট্রলি গাড়ি। সামান্য অসতর্কতায় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। জরুরী ভিত্তিতে ব্রিজের মেরামতসহ দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ১০টি, ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ২০টি গ্রাম, পার্শ্ববর্তী উপজেলা ধর্মপাশা ও মোহনগঞ্জের প্রায় শতাধিক গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করে আসছে। তাদের দৈনন্দিন কাজে উপজেলা এবং জেলা সদরে সুনামগঞ্জ-নেত্রকোনা আসা যাওয়ার একমাত্র পথে অবস্থিত এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রেজ দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এছাড়াও পাগনা হাওরের আশপাশ গ্রামের কৃষিপণ্য পরিবহনে একমাত্র ভরসা হিসেবে এই ব্রিজটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে করে যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এসব অঞ্চলের মানুষ যাতায়াত করলেও দিন দিন বড় হয়ে আসছে ব্রিজের সংযোগ র্গতটি। দ্রুত মেরামত না করলে আস্তে আস্তে আরও বড় হয়ে ব্রিজটিতে একেবারে যাতায়াত বন্ধ হয়ে যাবে।
ব্রিজ সংলগ্ন চাঁনপুর গ্রামের মুরব্বী মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলা সদরে কৃষিপণ্য নিয়ে বিক্রি করা এখন দায় হয়ে পড়েছে। ব্রিজের উপর দিয়ে চলতে এখন ভয় হয়। বিশেষ করে ব্রিজের সংযোগ সড়কের দুই পাশে বড় ধরনের দুটি গর্ত থাকায় যেকোনো অপরিচিত লোক বা গাড়ি গর্তে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন। তাই বড় ধরনের দুর্ঘটনার আগেই সংযোগ সড়কটি মেরামত করার দাবি জানাই।’
জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ মাহমুদ তালুকদার জানান, বিগত বন্যায় ব্রিজের সংযোগের দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ায় বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আমি উপজেলা প্রকৌশলী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছে। ব্রিজটির সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো. আনিসুর রহমান জানান, বিগত বন্যায় ব্রিজের দুই পাশের মাটি সরে যাওয়ায় সংযোগ সড়কে দুইটি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজের কাছাকাছি মাটি না থাকায় আপাতত কাজ করা যাচ্ছে না। দুর্ঘটনা রোধে বিপজ্জনক স্থানটিতে লাল পতাকা টানিয়ে দেওয়া হবে। পানি শুকালে ব্রিজের কাজ করা হবে।

Tuesday, 8 September 2020

কনস্টেবলের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ৷ মামলা করায় বাদীনিকে মামলা প্রত্যাহারের হুমকি !

কনস্টেবলের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতনের অভিযোগ৷ মামলা করায় বাদীনিকে মামলা প্রত্যাহারের হুমকি !


রক্ষক যখন ভক্ষক হয়! আশ্রয় পায়নি নিরাশ্রয়!
তখন এ বিষয়টি শুনলেই যেন কেমন হয়…? আর বিষয়টি যদি ঘটে অর্ধাঙ্গিনী অর্থাৎ জীবন সঙ্গী স্ত্রীর সাথে, সেটা খুবই দুঃখময়! এমন একটি ঘটনা ঘটেছে একজন পুলিশ কনস্টেবল সদস্যের পরিবারে৷ তিনি কাজী লালন বয়স (২৪), (কং নং /২৪৫৯
বর্তমানে এস.এম.পি সিলেটে কর্মরত আছেন, তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জামাল গঞ্জ থানার সংবাদ পুর গ্রামে, তার পিতার নাম কাজী কুতুব উদ্দীন৷
কাজী লালনের সাথে বিগত ২ ফেব্রুয়ারিতে ২০২০ ইং তারিখে বিবাহ হয় হবিগঞ্জের আনিসুজ্জামানের কন্যা পান্না আক্তারের,তিনি
বর্তমান র্মীরের ময়দান থানা কোতোয়ালী জেলা সিলেটে বসবাস করেন৷
পান্না আক্তার নামের অসহায় মেয়েটির পূর্বে আরেকটি বিবাহ হয়েছিল,তার একটি শিশু সন্তান ও রয়েছে পূর্বের স্বামীর ঔরসজাত৷
,বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই পান্না আক্তারের উপর নেমে আসে নানা নির্যাতন৷ এক পর্যায়ে পান্না আক্তার গর্ভবতী হয়ে পড়লে তার গর্ভ নষ্ট করার জন্য স্বামী কাজী লালন তাকে চাপ সৃষ্টি করেন,স্বামীর কথা সে রাখতে অসম্মতি জানালে সুকৌশলে পান্নাকে কোমল জাতীয় পানির মধ্যে গর্ভ নস্ট করার ঔষধ মিশিয়ে সেবন করিয়ে তার গর্ভ নষ্ট করেন লালন এবং তাকে নানান নির্যাতন করেন তিনি৷ তার পর শুরু হয নতুন নির্যাতনের ষ্টিম রোলার কনস্টেবল কাজী লালন তার ঘরবাড়ীর অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার কথা বলে
স্ত্রীকে যৌতুক বাবত ৮লক্ষ টাকা তার পিত্রালয় থেকে এনে দেবার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন,এতে পান্না আক্তার তার পিতার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে পারবেন না বলে অসহায়ত্বের কথা জানান৷ এতে তার স্বামী ও ভাসুর তাকে শারিরীক ও মানষিক ভাবে চরম নির্যাতন করে আহত করেন৷ পরে তিনি সিলেট এম,এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন৷
এঘটনায় তিনি বাদী হয়ে সিলেট বিজ্ঞ নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন, মামলা নং ২১৭/২০২০)৷ বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে৷
উক্ত মামলা দায়েরের পর থেকে মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য পান্নাকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন তার স্বামী ও ভাসুর সহ তাদের লোকজন৷
এক পর্যায়ে গত ৪ আগষ্ট পান্না আক্তার তার ছোট বোন সামছুন্নাহার স্বর্ণাকে সাথে নিয়ে দুপুর অনুমান ১২টার দিকে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানাধীন বন্দর বাজারস্থ হাছান মার্কেটের বিপরীতে সিএনজি স্ট্যান্ডে গাড়ী হইতে নামা মাত্র তার ভাসুর কাজী গোলাম চিশতিয়া(৩০),একটি মোটর সাইকেল যোগে অজ্ঞাত আররকজন সহযোগী নিয়ে তাদের পথরোধ করে তার দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের হুমকি ধামকি তাকে ও তার পূর্বের শিশু সন্তানকে অপহরণ করে গুম করার হুমকি দেয় আসামীরা৷যদি মামলা প্রত্যাহার না করেন তবে মামলার বাদীনি পান্না ও তার বোনের এমন অবস্থা আসামীরা করিবে বলে হুমকি দিয়ে যায়, তারা বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করবে৷
এঘটনায় পান্না আক্তার পূণরায় বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় তার ভাসুর ও অজ্ঞাত আরেক সহযোগীর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করেন,জিডি নং ১৫০ তারিখ ০৪/০৮/২০২০৷ উল্লেখিত তথ্য সমূহ আদালতে মামলা ও থানায় দায়েরকৃত জিডিতে উল্লেখ করেন পান্না,
পান্না আক্তার আরো বলেন তার স্বামী পুলিশের লোক হওয়ায় তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে হুমকি সহ নানা নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন৷ তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।