লড়াই হবে নৌকা ধানের শীষে |Sunamganj Live| সুনামগঞ্জ লাইভ
বিশ্বজিত রায়, জামালগঞ্জজামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন আগামীকাল (মঙ্গলবার)। এই উপজেলার নির্বাচনী প্রচারণা শেষ মূহূর্তে উৎসবমূখর হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে জেলা নেতৃবৃন্দ প্রচারণায় যুক্ত হওয়ায় এখানকার ভোটের লড়াইও নৌকা ও ধানের শীষের মধ্যেই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইকবাল আল আজাদ ও বিএনপি’র প্রার্থী নূরুল হক আফিন্দী’র মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা জমেছে।
তবে বিএনপির আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুম মাহমুদ তালুকদারও শেষমেষ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওঠে আসবেন বলে দাবি তার সমর্থকদের। অবশ্য তার আপন চাচা ফয়জুল আলম তালুকদার মোহন প্রার্থী থাকায় বেকায়দায় মাসুম।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল আল আজাদ প্রয়াত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদের জ্যেষ্ঠ পুত্র। তিনি ভোটের মাঠে পিতার আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তাকে প্রচারণায় কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন।
ইকবাল আল আজাদের নির্বাচনী প্রচারণায় নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্র ও জেলা নেতারা।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি নূরুল হুদা মুকুট, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত্, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল এবং সাবেক ছাত্রনেতা শাহরিয়ার চৌধুরী বিপ্লব সহ জেলা-উপজেলা পর্যায়ের বিপূল সংখ্যক নেতাকর্মী শেষের দিকে ইকবাল আল আজাদের নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত ছিলেন।
বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নূরুল হক আফিন্দী উপজেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি সাচনা বাজার ইউনিয়ন পরিষদের একাধিকবারের চেয়ারম্যান। ভোটের মাঠের শক্তিশালী এই প্রতিদ্বন্দ্বির পক্ষেও মাঠ চষে বেড়িয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম নূরুল, যুক্তরাজ্য আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হামিদুল হক আফিন্দী লিটন, জেলা যুবদলের সভাপতি আবুল মনসুর শওকতসহ অনেকে।
এছাড়া বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মাসুম মাহমুদ তালুকদারও তার বাবা সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল আলম তালুকদার ঝুনুর পরিচয় তুলে ধরে ঘুরেছেন ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে।
প্রচারণার শেষ দিনে প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টরা সুষ্ঠু, সুন্দর ভোটের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইকবাল আল আজাদ বললেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন জনগণের পাশে ছিলেন। নিঃস্বার্থভাবে তিনি মানুষের সেবা করে গেছেন। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বাবার যোগ্য উত্তরসুরী মনে করে মানুষ আমাকে ভোট দেবেন বলেই আমার প্রত্যাশা। বর্তমান সরকারের সময়কালে জামালগঞ্জের হাওরের পাড়ে পাড়ে উন্নয়নের ঢেউ লেগেছে। ভোটারগণ এই সুবাতাস ধরে রাখার চেষ্টা করবেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক, উন্নয়নের প্রতীক নৌকার বিজয় নিশ্চিতে আমি ভোটারদের সহযোগিতা চাই।’
বিএনপি প্রার্থী নূরুল হক আফিন্দী বলেন, ‘সাধারণ মানুষের মাঝে ভোট নিয়ে একটা দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে। আমরা পরস্পর শুনতেছি কেউ কেউ বলছেন নৌকায় ভোট দিলেও পাস, না দিলেও পাস। প্রশাসন যদি নিরপেক্ষ থাকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি সজাগ থাকে তাহলে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। আমি বিশ্বাস করি প্রশাসন এ ব্যাপারে সজাগ থাকবেন।’
মাসুম মাহমুদ তালুকদার বলেন, ‘আমি জনগণের মনোনীত প্রার্থী। আমার নির্বাচনে আসার সাহস জনগণ দিয়েছেন। নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত অনুকূলে আছে। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে আমি বিজয়ী হবো।’
মাসুম মাহমুদ তালুকদারের চাচা ফয়জুল আলম মোহন বলেন, ‘জনগণের সাড়া আছে, মানুষ আমাকে পছন্দ করে, ১৪ টি গ্রাম ঐক্যজোট হয়ে আমাকে সমর্থন করেছেন। ভোট সুষ্ঠু হবে এবং আমি জয়লাভ করবো।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিত দেব বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, এখনো পর্যন্ত কোন কেন্দ্র থেকে এ ধরণের কোন অভিযোগ পাই নি, শুনাও যায় নি। আশা করি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
আগামীকাল ২০ অক্টোবর জামালগঞ্জের উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে ৪৬ টি কেন্দ্রে ১ লাখ ১৭ হাজার ৪০০ ভোটার ভোট প্রয়োগ করবে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই উপজেলা পরিষদের ৩ বারের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদ মৃত্যুবরণ করায় এখানকার উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
0 coment rios: